সোমবার, ২১ মে, ২০১২

আমাকে একটি কথা দাও

জীবনানন্দ দাশ



আমাকে একটি কথা দাও যা আকাশের মতো
               সহজ মহৎ বিশাল,
গভীর - সমস্ত ক্লান্ত হতাহত গৃহবলিভুকদের রক্তে
মলিন ইতিহাসের অন্তর ধুয়ে চেনা হাতের মতন:
আমি যাকে আবহমান কাল ভালোবেসে এসেছি সেই নারীর।
সেই রাত্রির নক্ষত্রালোকিত নিবিড় বাতাসের মতো;
সেই দিনের - আলোর অন্তহীন এঞ্জিন-চঞ্চল ডানার মতন
সেই উজ্জ্বল পাখিনীর - পাখির সমস্ত পিপাসাকে যে
অগ্নির মতো প্রদীপ্ত দেখে অন্তিমশরীরিণী মোমের মতন।

কুড়ি বছর পরে

জীবনানন্দ দাশ



আবার বছর কুড়ি পরে তার সাথে দেখা হয় যদি!
আবার বছর কুড়ি পরে-
হয়তো ধানের ছড়ার পাশে
কার্তিকের মাসে-
তখন সন্ধ্যার কাক ঘরে ফেরে-তখন হলুদ নদী
নরম নরম হয় শর কাশ হোগলায়-মাঠের ভিতরে!
অথবা নাইকো ধান ক্ষেতে আর,
ব্যস্ততা নাইকো আর,
হাঁসের নীড়ের থেকে খড়
পাখির নীড়ের থেকে খড়
ছড়াতেছে; মনিয়ার ঘরে রাত, শীত আর শিশিরের জল!
জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুঁড়ি কুঁড়ি, বছরের পার-
তখন হঠাৎ যদি মেঠো পথে পাই আমি তোমারে আবার!
হয়তো এসেছে চাঁদ মাঝরাতে একরাশ পাতার পিছনে
সরু-সরু কালো কালো ডালপালা মুখে নিয়ে তার,
শিরীষের অথবা জামের,
ঝাউয়ের-আমের;
কুড়ি বছরের পরে তখন তোমারে নাই মনে!
জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি বছরের পার-
তখন আবার যদি দেখা হয় তোমার আমার!
তখন হয়তো মাঠে হামাগুড়ি দিয়ে পেঁচা নামে
বাবলার গলির অন্ধকারে
অশথের জানালার ফাঁকে
কোথায় লুকায় আপনাকে!
চোখের পাতার মতো নেমে চুপি চিলের ডানা থামে-
সোনালি সোনালি চিল-শিশির শিকার করে নিয়ে গেছে তারে-
কুড়ি বছরের পরে সেই কুয়াশায় পাই যদি হঠাৎ তোমারে!

আমি যদি হতাম

জীবনানন্দ দাশ



আমি যদি হতাম বনহংস;
বনহংসী হতে যদি তুমি;
কোনো এক দিগন্তের জলসিঁড়ি নদীর ধারে
ধানক্ষেতের কাছে
ছিপছিপে শরের ভিতর
এক নিরালা নীড়ে;
তাহলে আজ এই ফাল্পুনের রাতে
ঝাউয়ের শাখার পেছনে চাঁদ উঠতে দেখে
আমরা নিম্নভূমির জলের গন্ধ ছেড়ে
আকাশের রুপালি শস্যের ভিতর গা ভাসিয়ে দিতাম-
তোমার পাখনায় আমার পালক, আমার পাখনায় তোমার রক্তের স্পন্দন-
নীল আকাশে খইক্ষেতের সোনালি ফুলের মতো অজস্র তারা,
শিরীষ বনের সবুজ রোমশ নীড়ে
সোনার ডিমের মতো
ফাল্গুনের চাঁদ।
হয়তো গুলির শব্দঃ
আমাদের তির্যক গতিস্রোত,
আমাদের পাখায় পিস্‌টনের উল্লাস,
আমাদের কন্ঠে উত্তর হাওয়ার গান!
হয়তো গুলির শব্দ আবারঃ
আমাদের স্তব্ধতা,
আমাদের শান্তি।
আজকের জীবনের এই টুকরো টুকরো মৃত্যু আর থাকত না:
থাকত না আজকের জীবনের টুকরো টুকরো সাধের ব্যর্থতা ও অন্ধকার;
আমি যদি বনহংস হতাম,
বনহংসী হতে যদি তুমি;
কোনো এক দিগন্তের জলসিড়ি নদীর ধারে
ধানক্ষেতের কাছে।

এই পৃথিবীতে আমি অবসর নিয়ে শুধু আসিয়াছি

জীবনানন্দ দাশ



এই পৃথিবীতে আমি অবসর নিয়ে শুধু আসিয়াছি — আমি হৃষ্ট কবি
আমি এক; — ধুয়েছি আমার দেহ অন্ধকারে একা একা সমুদ্রের জলে;
ভালোবাসিয়াছি আমি রাঙা রোদ, ক্ষান্ত কার্তিকের মাঠে — ঘাসের আঁচলে
ফড়িঙের মতো আমি বেড়ায়েছি — দেখেছি কিশোরী এস হলুদ করবী
ছিঁড়ে নেয় — বুকে তার লাল পেড়ে ভিজে শাড়ি করুন শঙ্খের মতো ছবি
ফুটাতেছে — ভোরের আকাশখানা রাজহাস ভরে গেছে নব কোলাহলে
নব নব সূচনার: নদীর গোলাপী ঢেউ কথা বলে — তবু কথা বলে,
তবু জানি তার কথা কুয়াশায় ফুরায় না — কেউ যেন শুনিতেছে সবি


কোন্‌ রাঙা শাটিনের মেঘে বসে — অথবা শোনে না কেউ, শূণ্য কুয়াশায়
মুছে যায় সব তার; একদিন বর্ণচ্ছটা মুছে যাবো আমিও এমন;
তবু আজ সবুজ ঘাসের পরে বসে থাকি; ভালোবাসি; প্রেমের আশায়
পায়ের ধ্বনির দিকে কান পেতে থাকি চুপে; কাঁটাবহরের ফল করি আহরণ
কারে যেন এই গুলো দেবো আমি; মৃদু ঘাসে একা — একা বসে থাকা যায়
এই সব সাধ নিয়ে; যখন আসিবে ঘুম তারপর, ঘুমাব তখন।

কারা কবে কথা বলেছিল

জীবনানন্দ দাশ



কারা কবে কথা বলেছিল,
ভালবেসে এসেছিল কাছে,
তারা নাই, তাদের প্রতীক হয়ে তবু
কয়েকটি পুরানো গাছ আছে;
নক্ষত্রেরা রয়ে গেছে নদীর ওপরে;
চারিদিকে প্রান্তর ও ঘাস;
দু'চারটে ঘরবাড়ি নীড় ও শিশির;
কূলে কূলে একলা আকাশ।


যারা ছিল তারা কেও নেই;
জীবন তবুও এক শান্ত বিপ্লবী;
স্থির আগুনের মতো অবিরল আলোক দিতেছে;
আলো ছাড়া দহে যার সবি।


নিশ্চিত মৃত্যুর শুন্য আঁধারের আগে
হে নিঃসঙ্গ বৃ্ক্ষ মনবিহঙ্গম তুমি,
দেখেছিলে জেনেছিলে ভালবেসেছিলে;
দ্রুত পরিবর্তনের পটভূমি
পৃথিবীতে মানুষের যাওয়াআসা তবু
শিগগিরই এ মাটির নিজের স্বভাবে
মিশে সব লোভ প্রেম যুক্তিহীন ধূলো হয়ে যাবে
প্রকৃতির কত শত অনন্ত অমিয়ে।

সোনালী ডানার শঙ্খচিল

জীবনানন্দ দাশ



মনে পড়ে সেই কলকাতা–সেই তেরোশো তিরিশ–
বস্তির মতো ঘর,
বৌবাজারের মোড়ে দিনমান
... ট্রাম করে ঘরঘর।
আমাদের কিছু ছিল না তখন
ছিল শুধু যৌবন,
সাগরের মতো বেগুনি আকাশে
সোনালি চিলের মন।

ছেঁড়া শাড়ি পরে কাটাইতে দিন

বাঁটনা হলুদ মাখা
বিভারানী বোস, তোমার দু হাতে
ছিল দুটো শাদা শাঁখা,
শাদা শাঁখা শুধু তোমার দু হাতে
জুটিত না তেল চুলে,
তবুও আমরা দিতাম আকাশে
বকের পাখনা তুলে।

জুটিত না কালি কলমে আমার

কাগজে পড়িত টান,
তোমার বইয়ের মার্জিনে, বিভা,
লিখিতাম আমি গান।
পাশের বাড়ির পোড়া কাঠ এনে
দেয়ালে আঁকিতে ছবি।
আমি বলিতাম–’অবন্তী-বিভা’,
তুমি শুধাইতে ‘ঈগল কবি’

চক্ষে তোমার মিঙ্ যুগ ভাসে

কাঙড়ার ছবি ঐ নীল চোখে
আমার হৃদয়ে অনুরাধাপুর
পুরানো ফরাসি গানের বোকে
সেদিন আমার পথে পথে হাঁটা
সেও তম্বুরা মান্ডলিন
তোমার সেদিন ঘর সিঁড়ি ভাঙা
বাংলার পট, পুরোনো চীন।

পৃথিবীর মুখে তুড়ি দিয়ে দিয়ে

দুইটি হৃদয় সেই
ডাল তেল নুন জোটে না যাদের
জামা-শাড়ি কিছু নেই,
তবুও আকাশ জয়ের বাসনা
দু:খের গুলি সে যেন ঢিল,
আমরা দুজনে বেগুনি আকাশে
সোনালি ডানার শঙ্খচিল—

শরীরের ক্ষুধা মাটির মতন

স্বপ্ন তখন সোনার সিঁড়ি,
মানুষ থাকুক সংসারে পড়ে
আমরা উড়িব পৃথিবী ছিঁড়ি।

সকাল হয়েছে: চাল নাই ঘরে,

সন্ধা হয়েছে: প্রদীপ নাই,
আমার কবিতা কেউ কেনে নাকো?
তোমার ছবিও ঘুঁটের ছাই?

ছ মাসের ভাড়া পড়ে আছে না কি?

ঘরে নাই তবু চাল কড়ি নুন?
আকাশের নীল পথে পথে তবু
আমার হৃদয় আত্তিলা হূণ
আকাশের নীল পথ থেকে পথে
জানালার পর জানালা খুলে
ভোরের মুনিয়াপাখির মতন
কোথায় যে দিতে পাখনা তুলে।

সংসার আজ শিকার করেছে

সোনালি চিলেরা হল শিকার,
আজ আমি আর কবিতা লিখি না
তুমিও তো ছবি আঁকো না আর।
তবুও শীতের শেষে ফাল্গুনে
মাতাল যখন সোনালি বন
তেরোশো তিরিশ—দারিদ্র্য সেই
ফিরে চাই আজ সে যৌবন।

ফিরে চাই আমি তোমারে আবার

আমার কবিতা, তোমার ছবি—
শুধাতাম আমি ‘অনুরাধাপুর’—
শুধাইতে তুমি ‘শকুন কবি’।
সেই-যে আকাশ খোঁজার স্বপ্ন
দুখের ছররা—সে যেন ঢিল,
আমরা দুজনে বেগুনি আকাশে
সোনালি ডানার শঙ্খচিল।

সবচেয়ে বড় শত্রু


 সবচেয়ে বড় শত্রু
.........shipu
  

জীবনে টি জিনিসই শিখেছি যে দুটিই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় শত্রু  
- মানুষকে খুব সহজে বিশ্বাস করে তাকে সাহায্য করা,বিনিময়ে আমি হয়েছি প্রতারিত নিঃস্ব  
) লড়াই করে বাঁচতে শিখেছি কিন্তু আজ পর্যন্ত লড়াই আর শেষ হয়নি 
একটির পর একটি ঝড় এসে তছনছ করে দেয় যার পরে আমাকে আবার নতুন করে শুরু করতে হয়। 
'ভাগ্যর সহায়' বা 'সৌভাগ্য ' কি সেইটা আমি শুধু মানুষের মুখ থেকে শুনেছি কিন্তু আজ পর্যন্ত আমার জীবনে এমন কিছু পাইনি। তবুও বেঁচে আছি কারন আত্মহত্যা মহাপাপ , তাই বেঁচে থাকতে হয় যতক্ষণ না আমার স্বাভাবিক মৃত্যু না হয়





আমি তো বলিনি

আমি তো বলিনি

এলিনা নাহার



আমি তো বলিনি
রাস্তার পাশের ঐ সুন্দর বাড়িটার মত
আমার একটা বাড়ি চাই,
... শুধু বলেছি
পাশে রেখ সারাজীবন ।

আমি তো বলিনি
রুনা ভাবির মত
আমাকেও একটা স্বর্নের হার গড়ে দাও,
শুধু বলেছি
নীল পাড়ের একটা তাঁতের শাড়ি কিনে দিও ।

আমি তো বলিনি
আমার নিজেদের একটা গাড়ি চাই,
শুধু বলেছি
হুডখোলা রিকশায় রাতের আকাশ
দেখতে ভীষণ ভালো লাগে ।

আমি তো বলিনি
আমি পৃথিবী ঘুরতে চাই,
শুধু বলেছি
সামর্থ্য হলে একবার সাগর দেখিয়ে এনো ।

তবে কেন তোমার এই ব্যস্ততা,
উপরে উঠবার এই নেশা,
যে তোমাকেই হারিয়ে ফেলছি 'তোমার' থেকে!

কত ভালবাসি

কত ভালবাসি

কামিনী রায়




জড়ায়ে মায়ের গলা শিশু কহে আসি-
"মা তোমারে কত ভালবাসি।"
"কত ভালবাস ধন ?" জননী সুধায়।
... "এ-তো-" বলি দুই হাত প্রসারি দেখায়।

"তুমি মা আমারে ভালবাস কত খানি ?"
মা বলেন, "মাপ তার আমি নাহি জানি।"
"তবু কতখানি, বল !" "যতখানি ধরে
তোমার মায়ের বুকে।" "নহে তার পরে ?"
"তার বাড়া ভালবাসা পারিনা বাসিতে"
"আমি পারি।" বলে শিশু হাসিতে হাসিতে।

এখনো তুমি

এখনো তুমি




ভালোবাসা বলতে এখনো তোমাকেই বুঝি
ঘৃণা বলতে এখনো তোমাকে
সংসার বলতে এখনো তোমাকে বুঝি
সুখ বলতেও আমি এখনো তোমাকে
কত টুকু পশু আছে, কতটা হিংস্রতা
কতটা দানব থাকে একজন মানুষের দেহে
তোমাকে আমল ছুঁয়ে যেনে, আমি সমস্ত জেনেছি
তোমার তকের নিচে কত টুকু ক্লেদ
কতটা দ্রুদতা
চোখের তারায় তুমি কতটা রুখ পাপ
শরীলের ঘ্রাণ শুকে শুকে আমি সকল বুঝেছি
স্বপ্ন বলতে এখনো তোমাকেই বুঝি
কষ্ট বলতে এখনো তোমাকে
চুম্বনে তোমার লালা থেকে চুষে নেই
সংক্রামক ব্যাধি

তোমাকে আরোগ্য করি
তোমাকে শুশ্রূষা করি
তোমাকে নির্মাণ করি আমার বিনাশে
জীবন বলতে এখনো তোমাকে বুঝি
মৃত্যু বলতেও আমি এখনো তোমাকে।

আমার ভাঙ্গা কান্নাগুলো

আমার ভাঙ্গা কান্নাগুলো

তাসলিম রেজা



তাহাকে ভালবাসিবার লোভ আমি সামলাইয়াছি
যখন আদি-অন্তের সেতুর মাঝখানে দাঁড়াইয়া
ভালবাসার পদ্ম-জলে দেখিয়াছি
... লাল-লাল নীল-নীল ছোপ-ছোপ স্বার্থ!
যে চলিয়া যাইবে তাহাকে জড়াইয়া রাখিবার স্বার্থ নয়
এই স্বার্থ যে চলিয়া গেল তাহার মঙ্গল কামনায় প্রদীপ জ্বালাইবার
অথবা তাহার রাখিয়া যাওয়া ছায়া-অনলে নিজে জ্বলিবার।
স্মৃতিরা আজন্ম জ্বলিয়াই গেল, তবু ছাই হইল না

উর্বর দেহ-জমিনে বালুকা-মন লইয়া যাহারা চলিল
তাহারা প্রেমিক
প্রেমিকদের ভালবাসা ঘন্টাব্যাপী বিছানা ভ্রমণ
প্রেমিকদের চুম্বনের দাগ স্নানের প্রথম জলেই খসিয়া যায়
তাহাকে প্রেমিক প্করিবার সকল আয়োজন বিসর্জন দিয়াছি
যখন দেখিয়াছি হৃদয় হইতে তাহার দেবতা প্রিয় হাস্য মুখ
জীবনব্যাপী বরষার জলেও মুছিবে না

আমি সহস্র পুরুষের শার্টের কামুক গন্ধ নাকে শোঁকাইয়া বলি নাই
আমি সাধু
আমি একজন পুরুষের এক মুঠো ভালবাসা চাহিবার দন্ডে দন্ডিত
যাহার কাছে গোটা পৃথিবী এক খাঁচা শূন্য কারাগার, তাহাকে
প্রভু কোন কারাগারের ভয় দেখাইলেন তবে?
... আমার ধারাল কষ্টে হৃদয় ফাড়িয়া ছিন্ন, আর আমি বসিয়া কান্না ভাঙ্গি
যখন আমার ভাঙ্গা কান্না আরও ভাঙ্গিল, কান্নার টুকরা সাজাইয়া লিখিলাম-
তাহাকে ভালবাসিব বলিয়াই ভাল না বাসিবার শপথ; অস্থি-মাংস-মজ্জায়......

এক জন্ম

এক জন্ম

তারাপদ রায়



অনেকদিন দেখা হবে না
তারপর একদিন দেখা হবে।
দু'জনেই দুজনকে বলবো,
'অনেকদিন দেখা হয়নি'।
এইভাবে যাবে দিনের পর দিন
বৎসরের পর বৎসর।
তারপর একদিন হয়ত জানা যাবে
বা হয়ত জানা যাবে না,
যে
তোমার সঙ্গে আমার
অথবা
আমার সঙ্গে তোমার
আর দেখা হবে না।

ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদ জানে

ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদ জানে

নিলয় আহসান



ক্ষয়ে যাওয়া চাঁদ জানে,

জানে রাতের শুকতারা, বিরোহিনী রাত জানে,
জানে প্রানের নীল ভোমরা, চাওয়া আমার সবে জানে,
জানেনা তোমার হ্র্দয় অফিসের ডাকহরকরা।
...
শিউলি ফুল ও জানে,
জানে ওই ঝরা পাতা,
প্রেম উপন্যাসের মলাট জানে,
জানে ভালোবাসার কাব্য খাতা,
চাওয়া আমার সবে জানে,
জানেনা তোমার খামকেয়ালি শুভ্র তারা।

বনের টিয়া ও জানে,
জানে খেয়ার মাঝি,
আকাশ ঝরা বৃষ্টি ও জানে,
জানে প্রেমিকের আঁখি,
চাওয়া আমার সবে জানে,
জানেনা তোমার আঙর ভাঙা চোখের জলেরা।

ভালোবাসা খুব ব্যথার নকশা,
আঁকা-আঁকি সারাবেলা,
খই ফোটা ভোর নীলিমায় হারায়্,
ক্যানভাস তবু ছন্নছেড়া।